এবার রোজার চাহিদাকে মাথায় রেখে কলা চাষ করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাজাহানপুর ইউনিয়নের শেখালীপুর রাবনপাড়া মাঠের চাষিরা। ফলনও এসেছিল আশানুরূপ। আর কিছু দিন গেলেই বাজারজাত করে পকেটে থাকতো লাভের টাকা। কিন্তু হঠাৎ এক ঝড় শেষ করে দিয়েছে সব কিছু।
চোখের সামনে অপরিপক্ব বিধ্বস্ত কলার বাগান দেখে দিশেহারা চাষিরা। সোমবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় হঠাৎ করে আসা কয়েক মিনিটের প্রচণ্ড ঝড়ে শেখালীপুর রাবনপাড়া মাঠের দুইশ বিঘা কলার বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে ঝরে পড়ে গাছে থাকা কলার ছড়ি। এই ঝড়ে কয়েক কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষিরা।
তারা জানান, মাত্র দুই মিনিটের তীব্র ঝড়ে মাটিতে পড়ে গেছে শেখালীপুর রাবনপাড়া মাঠের ৬-৭টি বাগানের সবগুলো কলাগাছ। মাটিতে পড়ে থাকা কলাগাছের ফলন অপরিপক্ব থাকায় সেটিও বিক্রি হবে না। এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। দুইশ বিঘা জমির কলা অন্তত ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা বিক্রির আশা করেছিলেন।
এদিকে কলাচাষী তারেক রহমান বলেন, প্রায় ৩০ লাখ টাকা ঋণ করে চার বন্ধু মিলে কলার চাষাবাদ করেছিলাম। ফলনও হয়েছিল ভালো। আর কয়েকদিন পরেই রোজার সময় বাজারজাত করতাম। কিন্তু তার আগেই দুই মিনিটের ঝড়ে সব তছনছ হয়ে গেল। এখন আর কিছুই নেই।
আরেক চাষি মাসুদ আহমেদ জানান, সব শেষ হয়ে গেল। ১৯ লাখ টাকা ঋণ কিভাবে শোধ করব, তা বুঝতে পারছি না। আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কিছুই মাথায় আসছে না। কলাবাগানের জোগানদার মফিজুল ইসলাম বলেন, মাগরিবের নামাজের সময় পশ্চিম দিক থেকে হঠাৎ করেই বাতাস বইতে শুরু করে। বাতাস হয় দুই থেকে তিন মিনিট। ঘর থেকে বের হয়ে কলাবাগানে গিয়েই দেখি সব শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, শেখালীপুর রাবনপাড়া মাঠের কয়েকটি কলাবাগানের সবগুলো কলাগাছ ভেঙে পড়েছে। এতে কৃষকদের মধ্যে হাহাকার বিরাজ করছে। কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে চাষীদের। সরকারের উচিত তাদেরকে সহযোগিতা করা। কারণ তারা অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে পদ্মা নদীর ধারে কলাবাগান ও বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে হওয়ায় কৃষকদের এমন ক্ষতি বলছে কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদেরকে প্রণোদনা দেয়ার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।